উফ কি অস্বস্তি রে বাবা। মনে হচ্ছে সবার মুনডু চিবিয়ে খাই। এমনিতে খাই। তবে এখন আরো বেশি করে খেতে ইচ্ছা করছে। কিছু একটা ধাক্কা দিচ্ছে বার বার শরীরের ভেতর থেকে। বাবা বলে জরদা খেলে নাকি এরকম হয়। যাঃ বাব্বা আমি জর্দা কেন খেতে যাবো। আমার জন্য কত সুন্দর সুন্দর খাবার মা বানিয়ে দেয়। আর দিনে দিনে খাবারের কোয়ালিটি আর পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন নতুন স্বাদ নিচ্ছি। নতুন নতুন গন্ধ। এখনো খিচুড়ি। কিন্তু খিচুড়ির টেস্ট দিনে দিনে পাল্টে যাচ্ছে। চিকেন খাচ্ছি। চিবোতে পারিনা তাই এখনো গোটা কিছু খাচ্ছি না। কিন্তু চুষে তো খাই। মা মাঝে মাঝে বিস্কুট ধরিয়ে দেয়। সেটা আস্তে আস্তে নরম করে তার পর খাই। বেশ সুন্দর লাগে। বেশ, না শক্ত না নরম। শক্ত ছিল নরম হলো। বিউটিফুল আবিষ্কার। আর কত রকমের তার স্বাদ। মা মাঝে মাঝে ন্যাস্পাতি আপেল এসব দেয়। কিন্তু বিস্কুট আর মুড়ির কাছে আর কিছু লাগে না। মুড়ি তো দারুন। এক একটা যেন মহার্ঘ্য। কে যে বার করেছিল জানিনা। তবে তাকে অনেক অনেক থ্যাংকু। দাদু আবার মুড়ির সাথে আলুর তরকারি মেখে খায়। আমারও ইচ্ছা করে , কিন্তু ঝাল বলে দেয় না। সে না দিক। আমি চাইও না। আমার এখন সাটল টেস্ট এ বেশি ইন্টারেস্ট। আমার নাকি জিভে স্বাদ কোরক অনেক বেশি। সেটা যে কি জিনিস আমি জানিনা। মা বলে তাই আমিও চালিয়ে দিলাম। মোদ্দা কথা এই যে তুফানি স্বাদ আমার দরকার নেই। আমার এখন ভিন্ন ভিন্ন স্বাদ নেওয়া প্রয়োজন। আর কয়েক দিন হলো যবে থেকে মুখে এই সুর সুর অস্বস্তি হচ্ছে তখন থেকে যেন আমার সব কিছুর স্বাদ নিতে ইচ্ছা করছে। যেমন ধরুন মায়ের জুতো , টিভির তার , দরজা , জানলা , চাদর , মায়ের ম্যাক্সি। মায়ের ম্যাক্সি তো অসাধারণ। রাতে যখন রান্না করার পর আমার সাথে খেলা করে , তখন তো মায়ের ম্যাক্সি যে কি টেস্টি হয় না আর কি বলবো। যা যা রান্না মা আমাকে খেতে দেয় না সেই সব গন্ধ এসে মায়ের কাপড়ে লেগে যায়। আর লোকে বলে না ঘ্রানেন অর্ধাং ভোজনাম। সেই ঘ্রানে আমার চোখে নাকে জল চলে আসে। আর মায়ের কাপড় চিবিয়ে আমি উদরপূর্তি করি।
কিন্তু এখন শুধু ঘ্রানে ব্যাপারটা ঠিক চলছে না। আই নিড সামথিং টু বাইট। মাঝ খান থেকে একটা কি যেন আপদ নিয়ে এসেছে মা। টিথার। দেখতে ভালো। খেতে নয়। হাজার হোক প্লাস্টিকেরই তো বানানো। তার থেকে মায়ের আঙ্গুল অনেক বেশি সুস্বাদু। কিন্তু কামড়ালেই মা হাত সরিয়ে নিচ্ছে। আমি কি আর কামড়ে ছিঁড়ে নেবো। এটুকু তো সহ্য করো। এটুকু তো বোঝো আমার জ্বালা। আমার ঠিক ভাষায় আসছে না ফেনোমেনা টাকে ঠিক কি বলবো। বলতে পারো খুব মাড়ি চুলকোচ্ছে।
কয়েকদিন ধরে মুখে আঙ্গুল দিয়ে মাড়ি ম্যাসাজ করার চেষ্টা করছিলাম। দুটো আঙ্গুল মুখে দিয়ে একবার ওপর মাড়ি একবার নিচের মাড়ি। বেশ আরাম লাগছিলো। কিন্তু যতবার মা দেখতে পাচ্ছে ততবার হাত মুখ থেকে বার করে দিচ্ছে। ওখান থেকে বাবা ডায়লগ দিচ্ছে আঙ্গুল চোষা যেকোনো ভাবে বন্ধ করতে হবে। আমার কোন এক পিসি নাকি এতো আঙ্গুল চুষত যে আঙ্গুল নাকি সরু হয়ে গেছিলো। কি ফালতু কথা যে বলতে পারে এই সমস্ত ধাড়ি ধাড়ি লোকগুলো। আঙ্গুল কি আর ক্যান্ডি যে চুষলে রোগা হয়ে যাবে। আমি গোপনে তাই মাঝে মাঝে চেখে দেখেছিলাম। বিশেষ কিছু তো টেস্টও নেই। মাঝখান থেকে হামা দেওয়ার সময় যত রাজ্যের বাড়ির গন্ধ আমার মুখে। সে থাক। কিন্তু ম্যাসাজ করতে বেশ ভালো লাগছিলো, মা হাত বার করলেও আমি ঠিক মায়ের অলক্ষে চালিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু - কিন্তু - কিন্তু - কিন্তু বাঁধ সাধলো সমবয়সী পরলিঙ্গের কটূক্তি। আলিয়ার শুধু একটা সেন্টেন্স আমায় নাড়িয়ে দিলো , "ব্যাড হ্যাবিট্স।" এখন আঙ্গুল মুখে ঢোকালেই ওই সুন্দর মুখের বেঁকে যাওয়াটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। হাউ ম্যানিপুলেটিং দিস অপোজিট জেন্ডার্স আর।
কিন্তু কি করি। আমি যে আর পারছি না। মা মাদার্স ডের আগে যেই নতুন জুতো কিনে আনলো , হৃদয় আমার নেচে উঠলো। বাক্স খুলতে একটা ভুর ভুরে গন্ধ বেরিয়ে এসে আমায় বলে উঠলো , "আয় তো , আয় তো আধ্যান , আয় তো। " মা ধপাস করে বন্ধ করে দিলো বাক্সটা। মাদার্স ডের দিন যদিও সুযোগ পেয়েছিলাম কিন্তু মাকে খুশি করার জন্য বৃথা পন্ডশ্রম করে সেই সুযোগ অবহেলায় ছেড়ে দিয়েছিলাম। সে গল্প তো আগেই বলেছি। কিন্তু এখন যখন কোনো বাধা নেই তখন আমি তরতর করে চলে গেলাম যখন মা এক মনে টিভি দেখছে। তুলে নিলাম হাতে লাল টুকটুক সুন্দর জুতোটা। গন্ধে ভুর ভুর করছে। দিলাম এক কামড়। ইশশ। বাবা ঠিকই বলে সব কিছু চেখে দেখে তবে ছাড়তে হয়। কি বিচ্ছিরি খেতে। এরকমও আবার হয় নাকি। যা সুন্দর তা দেখতেও সুন্দর , গন্ধও সুন্দর, স্বাভাবিক ভাবে খেতেও সুন্দর হওয়া উচিত। যেমন মা।
মা যখন স্নান করে বেরিয়ে এসে ঠাকুর পুজো করার পর আমায় এসে চটকায় তখন যে মা কে কি সুন্দর লাগে না। যেমন সুন্দর দেখতে , তেমন সুন্দর গন্ধ বেরোয় মায়ের গা থেকে , আর যদি দিই এক কামড় তাহলে তো মন ভরে যায়। নরম , গরম , চরম। কিন্তু মা তারপর খ্যাঁক খ্যাঁক করতে থাকে। মানে এইটুকু আন্ডারস্টেনডেবল যে খাদ্যর কখনো খাদ্য হতে ভালো লাগে না।
আজকাল আমার আরেকটা জিনিস খেতে ভালো লাগে বেশ। ময়েসচারাইসার ক্রিম বা আমার বেবি ক্রিম। মা আবার বাবাকে দেখিয়েছিলো একদিন ওটা নাকি পিওর কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে বানানো। কর্ন মানে তো ফোঁড়া আর ফ্লাওয়ার মানে তো ফুল। ফোঁড়ার আবার ফুল হয় নাকি। কি জানি বাবা , যত বড় হচ্ছি তত সব কিছু গুবলেট পাকাচ্ছি। একই জিনিসের এতো মানে। যাইহোক সেই ক্রীম কিন্তু খেতে বেশ ভালো। আমার মুখে যখন মা মাখিয়ে দেয় আমি বেশ চেটে চেটে খাই। একটা সমস্যা হচ্ছে গায়ে বেশিক্ষন টেকে না। মা লাগিয়ে দেওয়ার পর পরই হাত কামড়ে দেখেছি আছে। কিন্তু তারপরেই ভ্যানিশ। ঠিক আমার দুপুরের আলমন্ড অয়েলের মতো। কি সুন্দর একটা গন্ধ , কি সুন্দর স্বাদ। কিন্ত গায়ে মাখানোর সাথে সাথে হাওয়া। দিদা বলতো সব টেনে নিচ্ছি। তাহলে কি স্বাদ কোরক আমার গায়েও আছে। কিন্তু স্বাদ তো কি পাইনা।
শুধু এইসব নয়। আজকাল এমন সব জিনিসের প্রতি মন টেনেছে যে মন আর ধরে রাখতে পারছি না। মনটা যে কি সেটা এবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। সেই ডে কেয়ারের ডায়েরীতে লিখেছিলাম না জেসমিনের অবাক চাউনিতে কিরকম একটা অবস্থা হয়েছিল। ঠিক সেই জিনিসটাই এখন আমায় হির হির করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। মুখে সুর সুর করে উঠলেই যেটা একটু বেরিয়ে আছে তাতেই কামড় বসাতে ইচ্ছা করছে। সেদিন তো হাইট বোকামো করেছি। ফ্রিজের গায়ে একটা বলটুর মতো কিছু লেগে থাকে। কোনোদিন চোখ পড়েনি। সেদিনই কি হলো , মুখে ব্যাথা করে উঠলো। আর ফ্রিজের সামনে ছিলাম উঠে দাঁড়িয়ে কামড়ে ধরার চেষ্টা করলাম। সে কি হয়। সারা জায়গা নালে নাল হয়ে গেলো। কিন্তু আমি কামড়াতে আর পারলাম না। অনেক ভাবে কোমড় বেঁকিয়ে দুলিয়ে অনেক কিছু চেষ্টা করলাম। কিন্ত মনের শান্তি কিছুতেই মিটলো না। শেষে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার এর তার চিবিয়ে মন শান্ত হলো।
এই তার আমার সবথেকে প্রিয় বন্ধু , তার কথা আগেই বলেছি। এখানে এইটুকু বলে রাখি , তার আমার এই সুড়সুড়ির একমাত্র ঔষধ। কি সুন্দর ভাবে মুখের এদিক থেকে ওদিকে ঢুকে যায়। ওদিক থেকে এদিকে চলে আসে। আমি আবার টানলে ম্যাসাজও হয়ে যায়। সব মিলিয়ে পারফেক্টলি ডিসাইন্ড ফর হেল্পিং পুওর হেল্পলেস কিড লাইক মি।
কিন্তু এই পরিস্থিতির কারণ তখনও বুঝতে পারিনি। এটা বেশ কয়েকদিন ধরে চলছিল। আগে যখন হতো তখন ঠোঁট গুলো হাঁসের মতো করলে বেশ কিছুটা রিলিফ হতো আর আমি ব্যাপারটা ইগনোর মারতাম। কিন্তু এবারের ওয়েভ টা যেন কাটতে চাইছে না। কিছুই নেই অথচ কিছু একটা ঠেলা মারছে ভেতর থেকে। তার ওপর শুরু হলো মুড সুইং। কথা নেই বার্তা নেই কোথা থেকে ইমোশন বার্স্ট হতে আরম্ভ করলো জানিনা। এতো বিরক্ত হয়ে যেতে আরম্ভ করলাম যে নিজের ঘ্যানঘ্যানে নিজেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে যেতে লাগলাম। তারপর হঠাৎ করে খাওয়ার দিকে অনীহা শুরু হলো। খাওয়াটা অতো বড় ফ্যাক্টর নয়। ফ্যাক্টর হলো, যাদের কাছে এটা বড় ফ্যাক্টর, তাদের উত্যক্ত করা ব্যবহার আর বিরক্তি ভরা মুখ সহ্য করা। কিন্তু কিছু করার নেই, আমি নিজের অস্বস্তি আর লোকের বিরক্তি একসাথে নিজের ঘাড়ে চাপিয়ে দাঁড় বইতে লাগলাম।
ব্যাপারটা খোলসা হলো সেদিন যেদিন মা আমার সামনে ফোন ধরে বাবার সাথে চ্যাট করছিলো আর বাবা বললো , "একবার বলো অর্হনের গাড়ি কেমন করে চলে - কিরিং কিরিং তাহলে ও ওই মুখ হা করে হাসবে।" ওরে ব্যাটা। মানছি আমার ওই কথাটা শুনলে বেশ মজা লাগে আর আমি বিশাল হেসে মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকি , কিন্তু দে আর ইউসিং ইট টু মেক মাইসেলফ ফানি। ইস ইট পার্ডোনেবল? কিন্তু না , উদ্যেশ্যে দু চারদানা বিধেয় আছে মনে হলো। আমি আমার ইউসুয়াল বিহেভিয়ার করতে, মা বলে উঠলো , "আমার রাবিট , আমার ছোট্টো খরগোশ "। কথাটা মিষ্টি শোনালো বটে কিন্তু "খরগোশ" কেমন যেন ইরিটেটিং সাউন্ড করলো আমার কানে। যেহেতু রুট কস এনালাইসিস করাটা ইম্পরট্যান্ট তাই চুপ করে গেলাম। কারণ জানি আমায় এবার আয়নার সামনে নিয়ে যাওয়া হবে আর আমি নিজেই নিজেকে দেখে বেশি খুশি হয়ে আরো হাসবো। আর তা দেখে বাবা মা আরো হাসবে।
আয়নার সামনে গিয়ে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয়ে গেলো। আমার ওপরের মাড়ি আর নিচের মাড়ি সাদা। কোনো জিনিস আবিষ্কার করার পর ওটাকে নিয়ে ঘাঁটতে বেশ ভালো লাগে। আরো গূঢ় তত্ব বেরিয়ে আসে যখন আবিষ্কৃত তত্বের পর্যালোচনা হয়। জিভ দিয়ে ঘষতেই বুঝতে পারলাম এটা সেই জিনিস যেটা এক দাদুর মুখে থাকে আর এক দাদুর কৌটোতে। আমার দাঁত বেরোচ্ছে আর তাই জন্যই এতো সমস্যা। তাই জন্যই আমার মন উতলা , যৌবন চঞ্চল , শরীর আনচান , হতাশা আনন্দে দোদুল্যমান। কিন্তু এক মিনিট। হোয়াট ইস খরগোশ। আই ডোন্ট নো হোয়াট ইস খরগোশ। আমি এটুকু বুঝলাম ইট ইস সামথিং কিউট এনিম্যাল। কিন্তু আমি মানুষ। আমায় এরকম করে অপমান করা চলে না। এদিকে আবার সুরসুর করা শুরু হয়ে গেছে। আর বাবার কথায় মা একটা আঙ্গুল চালিয়ে দিয়েছে মুখের মধ্যে। একে সুন্দর আঙ্গুল , তারপর দাঁতের জন্য মন উচাটন , সাথে খরগোশ বলায় মন প্রতিহিংসাপরায়ণ , সব মিলিয়ে আমার নেগেটিভ সত্বা গেলো জিতে। সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ওপরে একটা নিচে দুটো দাঁত দিয়ে দিলাম এক প্রচন্ড চাপ। বাকিটা। ........ ইতিহাস।
Dudine diary gile fellum :3
ReplyDelete