Friday, August 18, 2017

আধ্যানের ডায়েরী - আবার সমুদ্রে


অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি আমার বাবা মা পাগল হয়ে গেছে।  শুনতে খারাপ লাগলেও আমার কিছু করার নেই।  একই দিনে তারা যে দু দুটো কাজ করে বসেছে, তার জন্য আমার সাইকোলজিক্যাল এনালাইসিস এটাই বলে যে, তাদের মাথায় যে  পোকাগুলো আগে থেকে নড়ছিলো সেগুলোর এখন ডানা গজিয়েছে।  ব্যাপারটা খুলেই বলেই তাহলে।

আগেই আমার চুল কাটার কথা বলেছি।  যে নারকীয় তান্ডব চলেছিল কয়েক সেকেন্ডের জন্যে তার বিবরণ আমি আগেই দিয়েছি।  মানুষকে ভ্রান্ত করে কবরে ঠেলে দিয়ে মাটি চাপা দিয়ে টুকি টুকি খেলাকে মোটেও সুস্থ মানুষের বিহেভিয়ার বলে না।  কিন্তু তারা করেছিল।  যদিও পরে বুঝেছিলাম যে তারা আমাকে সত্যি সত্যি ঘোরাতে নিয়ে যাচ্ছে।  কিন্ত তখন আমার মন আর মুড দুটোই খারাপ।  আর সাথে সারা গায়ে চুল।  সেই সাধের চুল , কোঁকড়ানো সেলিব্রেটেড এন্ড হাইলি এপ্রিসিয়েটেড চুলের দেহাবশেষ তখন আমার সারা গায়ে।  মনে অস্বস্তি , শরীরে অস্বস্তি নিয়ে আমি গিয়ে আমার কার সিটে বসলাম। 

ঘন্টাখানেকের রাস্তা।  তখন আমার মধ্যে বিন্দুমাত্র কিউরিওসিটি নেই  যে আমাকে নিয়ে কোথায় যাওয়া হচ্ছে।  তখন আমার মাথা ফাঁকা।  যেহেতু এদেশের হাজার নিয়মের জন্য ক্ষুর দিয়ে চেঁচে পুরো চকচকে করে দেয়নি তাই তখনও  দেখে বোঝা যাচ্ছিলো যে ওই উজাড় মরুক্ষেত্রে এক সময় হরিয়ালি ছিল।  তার ওপর বিন্দুমাত্র সৌজন্যবোধ নেই।  মা এসে পাশে বসে আমার মুখে দুধ ঢোকাচ্ছে।  কি জ্বালাতন।  কেন, কেন খাবো আমি? আমার তখন মাঝে মাঝেই বুক থেকে কান্না এসে গলার মধ্যে চেপে বসছে।  সেটাই গিলে নিচ্ছে ভবিতব্যের নামে গালাগালি দিয়ে।  কপাল , কপাল আমার ,যে এরকম বাবা মা পেয়েছি।  তার মধ্যে আবার দুধ। 

বাবা গাড়ি চালাতে আরম্ভ করেছে।  আর রিয়ার ভিউ মিররটা হেলিয়ে দিয়েছে।  যাতে পেছনের রাস্তার জায়গায় আমার টাক দেখতে পারে।  কি কিউট , কি কিউট লাগছে , মুখে তোতাপাখির মতো বুলি বলেই চলেছে।  আর মা মাঝে মাঝেই চটকে দিচ্ছে পাশে বসে।  সেটা অলরাইট।  মায়ের চটকানো অলওয়েজ ওয়েলকাম।  কিন্তু বাবার ওই দাঁত , প্লিস বন্ধ করো।  কিন্তু কে কার কথা শোনে।  এদিকে যদিও মায়ের ওপর প্রচন্ড রাগ হলেও মা ইস মা।  তাই দুধ খেয়ে খুশি করা ছাড়া আমার কাছে তখন অন্য কিছু পন্থা ছিল না।  সেটাই খেতে লাগলাম। 

মনটা একটু অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাস্তাঘাট দেখছিলাম।  আমার এখন নতুন কার সিট্।  ফ্রন্ট ফেসিং। সামনের রাস্তা দেখতে পাই।  আর কার সিটটা  বেশ বড়। বেশ হাত পা খেলিয়ে বসে যায়।  বড় বড় হাই তুলে সারা শরীর স্ট্রেচ করা যায়।  যাকে বলে লং ড্রাইভের জন্য একদম পারফেক্ট। এবার মনে হচ্ছে যেন সত্যি সত্যি লং ড্রাইভে যাচ্ছি।  কারণ লং  ড্রাইভে মা পায়ের চটি খুলে ফেলে পা ছড়িয়ে দেয় সামনের সিটে। আজকেও তাই, সুতরাং আমরাও কোনো সমস্যা নেই। 

সমস্যা নেই বললেই কি নেই।  এই যে বাবা গাড়ি চালাতে চালাতে বার বার পেছনের দিকে আমার দিকে তাকাচ্ছে  তার একটা সেফটি ইস্যু তো আছে।  মানুষ বুড়ো হলে সত্যি যে কি ভীমরতি ধরে না।  কি ভয় করছিলো যখন মাঝে মাঝে বাবা আবার পেছনের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে আমার পায়ে সুড়সুড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিলো।  মানে যেন তেন প্রকারেন আমার হাসিটা দেখতে হবে।  কি ভাগ্যিস আমার এই হাসি কেটে ফেলার কোনো উপায় নেই , নাহলে কবে সেটাও কেটে পকেটে পুরে নিয়ে চলে যেতো। ; আজকে তো আমি হাসবো না প্ল্যান করে রেখেছিলাম, লোকে বলে আঘাত করা খারাপ , কিন্তু ফোঁস না করলে পদদলিত হতে হয়।  যাকে বলে স্ট্যাম্পেড।  প্রথম দিকটায় সেটাই চেষ্টা করেছিলাম , কিন্তু বাবা যেরকম রেকলেস ড্রাইভ করে আমার হাসি দেখার চেষ্টা করছিলো সেটা না রুখে আর পারলাম না।  প্রথমে অনেককখন চিৎকার করে বোঝানোর চেষ্টা করলাম , বাবা টেক কেয়ার অফ ইওর ড্রাইভিং, বাট কে কার কথা শোনে।  বুঝলে তো শুনবে।  তাই শেষমেশ হেসে দিতে বাবা রাস্তার দিকে নজর দিলো। 

আমি নরমালি লং ড্রাইভের অধিকাংস সময় ঘুমিয়ে কাটাই, কিন্ত আজ ইচ্ছা ছিল না।  আজ ভেবেছিলাম পুরো রাস্তাটা দেখতে দেখতে যাবো।  কিন্তু সে আর কি হলো। দু চোখ টেনে আসলো।  আসলে তখন অলরেডি অনেক যুদ্ধ করে ক্লান্ত।  সাথে গায়ের চুলগুলো কুট কুট করছে।  বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি।  বিরক্ত আর রাগ হলে দেখেছি  শরীর আগে ক্লান্ত হয়ে আসে।  তাই ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ হয়ে গেলো।

ঘুম ভাঙলো বিশাল একটা ধাক্কায়।  আমি তো ভাবলাম গেলাম।  বাবা নিশ্চয় এক্সিডেন্ট করে বসে আছে।  কিন্তু না , দেখি সামনে একটা বিশাল গাড়ির লাইন।  বাবা নাকি পার্কিং পাচ্ছে না।  কোথায় যে এলাম , কেন যে এলাম আর পার্কিং পাওয়াটা যে কি, আমার কাছে সব কিছু তখন গুবলেট। চারপাশে কত লোক জন।  কত মানুষ। কিন্ত সবাই ন্যাপি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।  মাঝে মাঝে বাবা দাঁড়াচ্ছে আর সামনে দিয়ে এক গাদা দিদি কাকিমা ন্যাপি পরে রাস্তা ক্রস করছে।  কাকু বা দাদারা সবাই খালি গা আর সর্টস এ আছে। এরা বেশ বুদ্ধিমান।  আমাকে ডাইপার পরানোর পর যেন কেন একটা প্যান্ট পড়াতে চায় আমি বুঝিনা।  কি দরকার।  এদের দেখো , দিব্যি নীল লাল  সাদা ডাইপার আর ন্যাপি পরে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে রাস্তায়।  এই বাবা আর মাটা যে কবে বুদ্ধিমান হবে জানিনা। 

গাড়ি শেষমেশ পার্ক হলো।  আর আমি তড়াক করে নিচে নেমে গেলাম।  অতগুলো লোক দেখে একটু ভেবড়ে গেছিলাম।  ঠিক বুঝতে পারছিলাম  না ,এই এতগুলো লোকের উদ্যেশ্যটা কি। বাবার ম্যান হ্যান্ডলিং এ কোনো সৌন্দর্য্য নেই।  আমার হাত ধরে হির হির করে টানতে লাগলো।  আমি ব্যালান্স করতে না পেরে সামনে পরে যাচ্ছিলাম , কিন্তু যেহেতু হাত ধরা ছিল তাই ঝুলতে লাগলাম।  বাবা আবার তুলে ঠিক করে দাঁড় করিয়ে দিলো। 

কিছুটা এগোতে একটা দমকা হাওয়া এসে মুখে লাগলো।  আর সামনে দেখলাম কি বিশাল এক নীল জায়গা।  সবাই ওই নীলে ঢুকে লাফালাফি করছে।  জায়গাটা কেমন যেন চেনা চেনা লাগলো।  মনে হলো কখনো তো এসেছি এখানে। কিছুক্ষনের মধ্যে বাবাই ক্লিয়ার করে দিলো ব্যাপারটা।  এখানেই তো বাবা প্রথম নিয়ে এসেছিলো যখন আমার এক মাস বয়স ছিল।  তখন দুঃসাহসিকতার জন্য বাবাকে মেডেল টেডেল দেওয়া হয়েছিল।  কিন্তু আবার কেন।  আই নরমালি ডোন্ট প্রেফার টু গো টু দা সেম প্লেস এগেন এন্ড এগেন এন্ড এগেন, কারণ ওপর থেকে নিচে আসার সময় ভগবান আমার রিচার্জ লিমিট করে দিয়েছিলো।  আর বলে ছিল , ইউ নিড টু কাম ব্যাক ইন সেভেন্টি ইয়ার।  আমি বলেছিলাম , পৃথিবীতে টপ আপের ব্যবস্থা নেই ? তখন বলেছিলো , উই আর ওয়ার্কিং ও দিস ইস্যু।  যাইহোক , তাই এই কম সময়ে এতো বড় পৃথিবী দেখতে বার বার একই জিনিস রিপিট করার মতো সময় নেই ।  সাথে আবার বাবা বলেছে , "আমি আমার বাবা মা কে প্লেনে চাপিয়েছি , তুই আমাকে কিন্তু রকেটে চাপাস।" এই এক্সপেক্টেশনের চাপ সব সময় মানুষের মাথায়। 

কিন্তু জায়গাটার ক্যালকুলেশন ঠিক বুঝতে পারছিলাম না।  দুটো লম্বা জায়গা , একটা হলুদ, আর একটা নীল।  হলুদে সবাই বসে আছে, আর নীলে মাঝে মাঝে লোকজন ঝাঁপাচ্ছে আর ফিরে আসছে।  ঝাঁপালেই নীলটা নড়ে উঠে সাদা হয়ে যাচ্ছে।  এনালাইসিস করে এটুকু রিলেট করলাম , যে হলুদটা আমার কারসিটের মতো আর নীলটা আমার ডে কেয়ার।  হলুদে ওয়েট করে , নীলে একশান। 

আই হ্যাভ নো প্রব্লেম উইথ দ্যাট।  কিন্তু প্রব্লেম হলো হলুদে তো বসার জায়গাই নেই।  সবাই চাপাচাপি করে বসে আছে।  আই নিড মোর স্পেস।  কে কার কথা শোনে।  একটা বড় পাথরের ওপর সব জিনিস পত্র রেখে হঠাৎ কি হলো,  মা ক্ষেপে উঠলো।  হা ক্ষেপেই উঠলো বটে।  হঠাৎ করে কথা নেই , বার্তা নেই , বাবার কোল থেকে নিজের কোলে নিয়ে সোজা নীলের মধ্যে।  আমি তখন চারপাশ পর্যবেক্ষণ করছিলাম।  আমি একটু স্লো লার্নার , কিন্তু ডিপ লার্নার।  আমি এইটুকু বুঝেছি, আমার এইটুকু জীবনে , যে হঠকারিতা সমস্ত সমস্যার মূল।  এই এনলাইটমেন্ট আমার তখন হয়েছে যখন একদিন জলের গ্লাস দেখে ঢেলে নিয়েছি আমার মুখে।  সে এক সিন্ , কেশে কেঁদে আমার তখন যা তা অবস্থা। 

যাইহোক, যখন মা আমায় কোলে করে নীলে এনে ফেললো, তখন আমি এইটুকু বুঝতে পারলাম , যে ওই নীলটা আসলে জল।  অনেক জল।  অনেক অনেক অনেক জল।  আর ওই সাদা সাদা গুলো আর কিছু না, জলে চাপড় দিলে জল সরে গেলে যেরকম হয় সেরকম একটা জিনিস। কিন্তু এতো জলে তো ডুবে যাবো।  ডুবে গেলে আমার সত্তর বছরের রিচার্জের কি হবে।  আমি সব সময় অপ্টিমাইস্ড ইউসে বিশ্বাস করি।  জীবনটা এই ভাবে শেষ করতে পারবো না।  তারপর নিজের জন্য নয় , মা এর জন্য শেষ করতে তো আরোই রাজি নই।  কিন্তু মা এখন আমার থেকে শক্তিশালী, কোলে করে ঢুকে যেতে লাগলো জলের মধ্যে।  আরো গভীরে , আরো গভীরে আর বলে যেতে লাগলো, "ঢেউ খা , ঢেউ খা। " কিছু বোঝার আগেই বিশাল একটা জলের ঝাপ্টা আমাদের গায়ে। 

এটাকেই কি ঢেউ বলে।  আর এ কি নোনতা জল রে বাবা।  এ তো আমার নাকে দেওয়া হয়।  সর্দি বার করার জন্য।  আমি কবে থেকে ওপর মহলে আপিল করেছি এই ইনহিউম্যান প্রসেস অফ এক্সট্রাকটিং মিউকাস কে পরিবর্তন করতে।  কিন্তু যতই লোকে বলুক না কেন , নেসেসিটি  ইস নট মাদার অফ ইনভেনশন বরঞ্চ রিফ্রেস করে বলা উচিত ইনোভেটরস নেসেসিটি ইস দা মাদার অফ ইনভেনশন। বড়রা যারা ইনভেন্ট করে তারা যখন নাকে নুনজল  দিয়ে কষ্ট পেতো , তখন তারা এক্সপেকটোরেন্ট বার করেছিল নিজেদের জন্যে।  কিন্ত আমার বয়সে কেউ ইনভেন্ট করেনি।  তাই এখনও আমরা , মানে আমাদের এই খেটে খেটে খুঁটে  খাওয়া সম্প্রদায় এখনো চোখের জল নাকে ঢুকিয়ে সর্দি বার করে।  কেউ ভাবো আমাদের জন্যে , প্লিস।  আর এই মা, যে এতদিন আমার চুলের পেছনে পড়েছিল , আর যুক্তিও দিয়েছিলো যে নাকি চুলের জন্য আমার সর্দি লাগছে , সে আজকে আরো ওয়ান স্টেপ এহেড এগিয়ে আমাকে সেই নুন জলের বিশাল বাথটবে নিয়ে চলে এলো। 

আমি অবাক।  এতদিনে বুঝতে পারলাম , ওই ছোটো ছোটো সিসিগুলো কেন শেষ হয় না।  যখনি শেষ হয় , তখনি মা এসে চুপি চুপি এখান থেকে ভরে নিয়ে যায়।  এমনি করে তো আমার কষ্টের লাঘব হবে না।  আর এখন ঠিক মা কি চাইছে।  আমার নাকে মুখে চোখে এই জল ঢুকিয়ে দিয়ে পেটের  মধ্যে থেকে মিউকাস বার করবে।  আর আমি কাসতে কাসতে কষ্ট পেতে পেতে সব মিউকাস বার করে দেব।  কিন্তু যদি জল আমার লাংস এ ঢুকে যায় তখন তো খুব সমস্যা। দুদিন আগে মা খুব ভয় পেয়ে গেছিলো যখন আমি একবার সাংঘাতিক বমি করেছিলাম।  বাবার কাছে বলেছিলো ড্ৰাই ড্রাওনিং হয়েছে নাকি ছেলের।  বাবা নাকি আমাকে যখন বাথটাবে স্নান করায় তখন আমার লাংস এ জল চলে গেছে।  এই মা গুলোর জন্য একটা ডে কেয়ার খোলা উচিত , উপযুক্ত শিক্ষা দেয়ার জন্য।  তখন বাবার ওপর চ্যাঁচালো , কিন্তু আজ যে সিচুয়েশন তৈরী করতে চলেছে সেটা সম্পূর্ণ  ড্ৰাই ড্রাওনিং এর পটভূমিকা তৈরী করে। 

আমি পরিত্রাহি করে চিৎকার করা শুরু করলাম।  আমার কানে তখন জলের শব্দ , প্রচন্ড শব্দ।  আমি চিৎকার করছি , কিন্তু ততক্ষনে অনেকেই চিৎকার করতে আরম্ভ করেছে।  আমি অবাক।  বড়রাও এরমকম করে চিৎকার করে।  এর মধ্যে বাবা আবার ক্যাপচারিং দা মুমেন্ট।  ওরে আহাম্মক , একটাই তো প্রোডাক্ট জীবনে ভালো করে বার করেছিস।  সেটা যদি বিগড়ে যায় তখন হোয়াটস নেক্সট। কিন্তু কে আর কথা শোনে।  আমি দেখলাম বেগতিক , একলা চলো রে।  আমি উইদাউট পস পরিত্রাহি চিৎকার করতে লাগলাম।  কিছুক্ষন পর মায়ের কানে ঢুকলো।  এবার বাবাও যখন মায়ের ফুটপ্রিন্ট ফলো করতে লাগলো তখন আমি চিৎকার ডবল করে দিলাম।  কিছুক্ষন পর দুজনেই রণে ভঙ্গ দিয়ে।  আমায় ওই হলুদে নিয়ে এসে ফেললো। 

ওই হলুদটাও নোনতা। আর অদ্ভুত।  আমি অনেক ধরণের মাটি খেয়ে  দেখছি, কিন্তু এ কেমন ধারা মাটি।  বিস্কুটের গুঁড়োর মতো।  অথচ নোনতা।  আর গায়ে যেখানেই লাগছে সরছে না।  উফফ কি জ্বালাতন।  মাথায় গুঁড়ো গুঁড়ো  চুল আর হাতে গুঁড়ো গুঁড়ো মাটি।  বাবা বললো ওর নাম নাকি বালি আর বালি দিয়ে বানানো এই লম্বা জায়গাটাকে বলে বিচ।  এর ওপরেই বেশ কিছু আমার মতো লোকজন খেলছিল এই বালি গুলো নিয়ে।  হাত দিয়ে টানছে আর ঢিপি বানাচ্ছে।  আর খিলখিলিয়ে হাসছে।  আমি চেষ্টাও করলাম না , ব্যাপারটা বেশ ডেঞ্জারাস।  মাঝে মাঝে ওই নুনজল নীল থেকে এসে ওই বালিগুলোকে নোনতা করে চলে যাচ্ছে।  আমি নট গোয়িং টু সাপোর্ট এনিথিং হুইচ ইস এগেনস্ট মাই কমিউনিটি।  আমি টোটাল অবসার্ভেশন দিয়ে বুঝে নিলাম , এই মুভমেন্ট টু দা সো কলড বিচ ইস বেনিফিসিয়াল ফর দা বিগ পিপল, নট ফর আস।  আমি গোঁজ হয়ে বেশ কিছুক্ষন বসে থাকার পর দেখলাম বাবা মা রণে ভঙ্গ দিয়ে বাড়ি ফেরার তোড়জোড় করছে। 


বাড়ি ফিরে আসার পুরো রাস্তায় বাবা মা আমার ন্যাচারালাইজেশন নিয়ে কথা বলতে বলতে গেলো। মা বললো ওকে ওরকম ডাইরেক্ট সমুদ্রে নিয়ে যাওয়া ঠিক হয়নি।  ওহ , তো এটাই সমুদ্র।  বাবা বললো , ওকে প্রথমে বিচে অনেকক্ষন বসিয়ে রাখলে ও নিজেই সমুদ্রে যেত।  হে হে , আমি মুচকি হাঁসলাম ওই কথোপকথনে।  তবে এটুকু সত্যি , আমি বুঝে গেলাম আমার বাবা মার মানসিক ভারসাম্য অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে।  তারা প্রকৃতির সাথে যে আমার অভিশ্রাবণ প্রক্রিয়া আরম্ভ করেছে , সেটা টু আর্লি আর ফোর্সিং নেভার ওয়ার্কস। সাথে আমি জানতে পারলাম বিচটার নাম কি , মিস-কুই-মিকাট।  এই নামটা যে রাখতে পারে তার মস্তিস্ক যে আমার বাবা , মার থেকে বিশেষ ডেভেলপেড নয় সেটা বুঝতে পারলাম।  কি আর করা যাবে ,ফাইনালি আই ম্যানিপুলেটেড  দা ফ্রেস - জেন্টেলমেন থিঙ্ক এলাইক টু পাগলস থিঙ্ক এলাইক।   

আধ্যানের ডায়েরির আগের পাতাগুলো 

No comments:

Post a Comment