Monday, August 8, 2016

পার্থ ও চিত্রা


চাবি খুলে ঘরে ঢুকলো পার্থ,
সোফায় বসে থাকা চিত্রা তাকালো মুখ তুলে ।
হাতের মোবাইলটা পাশে রেখে উঠে দাড়ালো সে,
"আজ তাড়াতাড়ি চলে এলে?"
যান্ত্রিক অভিব্যক্তি পার্থর মুখে।
দুখের সামনে হাসতে নেই,
দুখীর সামনে নেই কাঁদতে।
পার্থ অনেক দিন পর সাফল্যের মুখ দেখেছে।
চিঠিটা পাওয়ার পরই ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ির পথে।
ইচ্ছা ছিল , জড়িয়ে ধরবে চিত্রাকে,
বলবে , "জিতেছি - জিতেছি - জিতেছি শেষমেষ।"
কিন্তু দরজা খুলতেই এক বিষন্ন দমকা হাওয়া,
মুছে দিল খুশির হাসি।
এক অসফল প্রচেষ্টা ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিল তার উচ্ছাসের উদ্ভাস।
চিত্রার মুখে সেই অবাক যান্ত্রিক হাসি।
দুপুরের রান্নার গন্ধ এখনো যায়নি,
প্রাত্যহিকি প্রতিবর্ত ক্রিয়ার প্রতিফলন চিত্রার মুখে।
তারা দুজনাই করছে লড়াই,
জীবনের উপকরণ সংগ্রহের।
আজ অনেকদিন হলো, চিত্রার প্রচেষ্টার,
শুধু হার, শুধু পরাজয়, শুধু অপমানের চিত্রকল্প।
তবু থামেনি তার চেষ্টা।
একই কাহিনী পার্থর, তবু আজ সে বিজয়ী।
আজ সে প্রাণ ভরে চায় উৎসবে মাততে,
উল্লাসে ফেটে পড়তে, একই সাথে কাদতে ও হাসতে।
চিত্রা এগিয়ে আসছে,
কয়েক ক্ষণ ব্যবধান - শান্ত হবে চিত্রা পার্থর আলিঙ্গনে।
অসহায় হয়ে অদ্ভূত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে চিত্রার দিকে।
যদি স্পর্শে অনুভব করে ফেলে তার অন্তরের আনন্দের প্লাবন?
ভালবাসার সাফল্য সফলদের পরিধান।
বিফলের ভালবাসা শুধুই পরিচ্ছেদ।
এত খুশিতেও আত্মগ্লানি হয় পার্থর।
জড়িয়ে ধরে চিত্রাকে, বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস,
ছলছলে চোখে চিত্রার কালো চুলে মুখ ডুবিয়ে বলে,
"তুমিও একদিন জিতবে।"

No comments:

Post a Comment